২০২২ সালে চাকরি প্রার্থীদের জন্য শুধুমাত্র লিংকডইনে একটি প্রোফাইল থাকাই যথেষ্ট নয়। ক্যারিয়ারে নিজেকে অন্যদের থেকে কয়েক ধাপ এগিয়ে রাখতে প্রয়োজন এটিকে সঠিকভাবে ব্যবহার করা এবং অপ্টিমাইজ করা। আপনি যে পেশারই হন না কেন, এই কর্পোরেট যুগে সঠিকভাবে নিজেকে উপস্থাপনের জন্য একটি প্রফেশনাল LinkedIn Profile এর কোন জুড়ি নেই। আপনার লক্ষ্য হওয়া উচিত এমন একটি প্রোফাইল তৈরি করা যা আপনার সম্পর্কে সঠিক ধারণা দেয় এবং প্রফেশনাল কমিউনিকেশন গড়ে তুলতে আপনাকে সাহায্য করে।
আপনার লিংকডইন প্রোফাইলকে প্রফেশনাল করতে আটটি টিপসঃ
১। প্রফেশনাল প্রোফাইল ফটো ব্যবহার করুন। যখন কেউ লিংকডইনে আপনার প্রোফাইল ভিজিট করেন প্রথমেই যা লক্ষ্য করেন তা হলো আপনার নাম এবং প্রোফাইল ফটো। অন্যসব সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোয় আমরা যে কোন ছবি বা নাম ব্যবহার করলেও লিংকডইন ব্যবহারের ক্ষেত্রে তা এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। যেহেতু এটি একটি প্রফেশনাল প্ল্যাটফর্ম তাই এখানে সেমিফরমাল অথবা ফরমাল ছবি ব্যবহার করবেন। নামের ক্ষেত্রে সার্টিফিকেটে বা জাতীয় পরিচয় পত্রে প্রদত্ত নাম ব্যবহার করবেন।
২। ”Summary” অংশটিতে আপনার সম্পর্কে কিছু সৃজনশীল এবং নির্ভরযোগ্য কথা, আপনার লক্ষ্য, ক্যারিয়ার গোল সাজিয়ে লিখবেন যাতে নিয়োগকর্তা আপনার প্রোফাইল ভিজিট করলে আপনার সম্পর্কে সঠিক ধারণা পান। কারণ নিয়োগকর্তা দীর্ঘ সময় আপনার পেছনে ব্যয় করবেন না, আপনার প্রোফাইল দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তবেই তিনি আপনার সম্পূর্ণ প্রোফাইল দেখবেন।
৩। আপনার কাজের অভিজ্ঞতা যুক্ত করুন। অনেক বেশি বিস্তারিত বর্ণনা আপানার প্রোফাইল ভিউয়ারের মনোযোগ নষ্ট করে। তাই আপনার বর্তমান পেশাগত দায়িত্ব ও অর্জন সংক্ষেপে লিখুন। এছাড়া পূর্ববর্তী পেশাগত অভিজ্ঞতাও সীমিত আকারে গুছিয়ে লিখুন। নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা যুক্ত করুন।
৪। ছাত্রাবস্থাতেই লিঙ্কডইন অ্যাকাউন্ট থাকা প্রমাণ করে যে আপনি এখন থেকেই কর্মজীবনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এডুকেশন সেকশনে কোন বিষয়টি নিয়ে পড়াশোনা করছেন তা উল্লেখ করুন। অভিজ্ঞতা অংশটিতে আপনি যদি পার্ট টাইম কোন কাজ করে থাকেন তা যুক্ত করুন। আপনি যে সেক্টরে কাজ করতে চান এখন থেকেই সেই পেশায় নিয়োজিত লোকেদের সাথে কানেকশান বাড়ান, এতে আপনি তাদের নজরে থাকবেন।
৫। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, লিঙ্কডইন ব্যবহারকারীদের যে প্রোফাইল ইউআরএল প্যাটার্ন দেয় তা সাধারণত সংখ্যার একটি সিরিজ সহ তাদের প্রথম এবং শেষ নাম অন্তর্ভুক্ত করে। এটি তাদের একই নামের ব্যবহারকারীদের আলাদা করতে সাহায্য করে। কাস্টমাইজ URL আপনাকে লিঙ্কিডইনে দ্রুত খুঁজে পাবার সহজ উপায় যা আপনাকে অন্য সমস্ত লিঙ্কডইন ব্যবহারকারীদের থেকে আলাদা করতে পারে৷
৬। আপনার প্রোফাইলে নিয়মিত কন্টেন্ট শেয়ার করুন। সেটা হতে পারে আপনার নিজস্ব কোনো ভাবনা,অথবা কোম্পানির কোন ব্লগ পোস্ট। এছাড়াও লিংকডইনে বিভিন্ন গ্রুপে যুক্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। আপনার দক্ষতা ও পেশার ধরণ অনুযায়ী সেসকল গ্রুপে জয়েন করুন। এসব গ্রুপে আপনার এবং আপনার কোম্পানির ব্লগ পোস্ট বা আর্টিকেল শেয়ার করুন। এতে করে মানুষ আপনার সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে উঠবে। এছাড়াও ফেসবুকের মত এখানেও আপনি নিজস্ব গ্রুপ তৈরি করে সেখানে আপনার কানেকশন যুক্ত করতে পারবেন।
৭। বর্তমানে এখন অনেক কোম্পানি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে লিংকডইন থেকে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন।লিংকডইন প্রোফাইলকে আপনি আপনার ভার্চুয়াল সিভি মনে করতে পারেন, সেই অনুযায়ী আপনার প্রোফাইলের প্রত্যেকটি ধাপ মনোযোগের সাথে সাজাবেন। অবশ্যই আপনার প্রোফাইলে একটি একটিভ ভ্যালিড ইমেল এড্রেস যুক্ত করবেন।
৮। সাধারণত আমরা সিভিতে অনেক ধরনের স্কিল উল্ল্যেখ করি।কিন্তু আপনি যে আসলেই স্কিলগুলোতে পারদর্শী সেগুলো ভ্যারিফাই করার সুযোগ নেই। । কিন্তু LinkedIn এ আপনার স্কিলগুলো আপনার সাথে কানেক্টেড মানুষদের মাধ্যমে এন্ড্রোস করার সুযোগ রয়েছে। এতে চাকরিদাতার আপনার প্রতি গ্রহনযোগ্যতা তৈরি হবে। এছাড়াও আপনার পূর্ববর্তী প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ কোনো কর্মকর্তা সরাসরি আপনার লিঙ্কডইন প্রোফাইলে রিকমেন্ড করতে পাররেন, এতে আপানার এই রিকমেন্ডেশনের অথেনটিকেশন বেড়ে যায়।
লিংকডইন প্রফেশনাল মানুষদের এমন একটি প্লাটফর্ম যেখানে প্রতদিন অসংখ্য চাকরির বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়। তাই একটি সম্পূর্ণ প্রফেশনাল LinkedIn Profile আপনাকে জব মার্কেটে অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখবে।
- নন ডিজাইনারদের কাছে ক্যানভা কেন এতো জনপ্রিয় ?
- মোশন গ্রাফিক্স এ ক্যারিয়ার এবং ভবিষ্যৎ
- ডিজিটাল মার্কেটিং কি? বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং এর চাহিদা
- এফ-কমার্স মার্কেটিং কি? মার্কেটপ্লেসে এফ-কমার্স মার্কেটিং এর গুরুত্ব