কিভাবে হবেন একজন সফল ফ্রিল্যান্সার?
বর্তমান সময়ের একটি বহুল আলোচিত এবং বিতর্কিত টপিকস হলো ফ্রিল্যান্সিং। বিশেষত করোনা মহামারীর এই সময়ে গতানুগতিক চাকরি বাজারের মন্দা কম বেশি সবাইকেই ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে আগ্রহী করে তুলছে। ফ্রিল্যান্সিং জগতে পদচারণা করলেও সঠিক দিকনির্দেশনা এবং দক্ষতার অভাবে অনেকেই মাঝপথেই ঝরে পরেন। তাই একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হতে শুরুতেই অর্থ উপার্জনের কথা না ভেবে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করুন।
আসুন জেনে নেই এই মুক্ত পেশায় সফল হবার আরও কিছু তন্ত্র মন্ত্র:
১। শুরুতেই রিসার্চ করুন। ফ্রিল্যান্সিং কি, ফ্রিল্যান্সারদের কাজের ধরণ, কি কি ধরণের কাজ এই পেশার অন্তর্ভুক্ত, এর বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ বাজার সবকিছু রিসার্চ করে সিদ্ধান্তে আসুন আপনি আদৌ একজন ফ্রিল্যান্সার হতে চান কিনা।ফ্রিল্যান্সিং কাজের সেক্টরগুলো সময় নিয়ে রিসার্চ করুন এবং জানুন কোন সেক্টরে কি ধরণের কাজ জানা প্রয়োজন।ফ্রিল্যান্সিংয়ের কিছু জনপ্রিয় সেক্টরগুলো হলোঃ
1.ডিজিটাল মার্কেটিং (Digital Marketing)
2.সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (Social Media Marketing)
3.ওয়েব ডেভেলপমেন্ট (Web Development)
4.ওয়েব ডিজাইন (Web Design)
5.গ্রাফিক্স ডিজাইন (Graphics Design)
6.এফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing)
7.এসইও (SEO-Search Engine Optimization) ইত্যাদি, এছড়াও আরো অনেক কাজ রয়েছে।
যে কাজটি আপনার সবচেয়ে ভালো লাগে বা আপনি ভাল ভাবে শিখে তা রপ্ত করতে পারবেন এবং মার্কেটপ্লেসে কাজের চাহিদা রয়েছে এমন একটি কাজ নির্বাচন করুন।
২। আপনি যদি নির্দিষ্ট কোন ক্ষেত্রে কাজ করতে চান, কিন্তু আপনার কাজের কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই, সেক্ষেত্রে সার্টিফিকেশন বা শেখার অভিজ্ঞতা আপনাকে মার্কেটপ্লেস এগিয়ে রাখবে।
৩।ফ্রিল্যান্সার হতে চাইলে অবশ্যই আপানাকে ইংরেজি ভাষা জানতে হবে। যেহেতু আপনি ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট প্লেসে কাজ করবেন, আপনাকে ইংলিশে কমিউনিকেশন জানতে হবে।
৪।আপনার কাজের বিস্তার ঘটাতে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্স প্ল্যাটফর্মে নিজেকে যুক্ত করুন ।সেখানে আপনার প্রোফাইল তৈরি করুন এবং আপনার কাজের পোর্টফলিও সবসময় আপডেট রাখুন। পাশাপাশি আপনার সেক্টরের ফেসবুক গ্রুপ গুলোতে জয়েন করুন, বিভিন্ন ফোরামে এক্টিভ থাকুন, ভালো কিছু ইউটিউব চ্যানেল, ব্লগ ফলো করুন।ফ্রিল্যান্সিং অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং একটি পেশা, এখানে প্রতিনিয়ত আপনাকে নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে। আপনাকেও তাই পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে কাজে নতুনত্ব নিয়ে আসতে হবে।
৫। ডিজিটালি নিজেকে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে তুলে ধরুন। সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মগুলোতে নিজেকে এক্টিভ রাখুন । নিজস্ব ফেসবুক পেইজ, ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলে আপনার প্রচারণা একটি ব্র্যান্ড ভ্যালু তৈরি করবে যা আপনাকে কাজ পেতে সাহায্য করবে।
৬। ফ্রিল্যান্সিং সফলতা পাওয়ার আরেকটি উপায় হচ্ছে ক্রিয়েটিভিটিত। আপনার ক্রিয়েটিভিটি এবং সার্ভিস কোয়ালিটি আপনাকে বাকি ফ্রিল্যান্সদের থেকে আপনাকে আগিয়ে রাখবে।[ ১ ]
৭। শেখার কোন শেষ নেই। প্রতিনিয়ত আপানার স্কিল ডেভেলপ করবেন।আপনার অনেক ব্যস্ততা থাকা সত্ত্বেও স্কিল ডেভেলোপ করা ছেড়ে দিবেন না। একজন সফল ফ্রীল্যান্সারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করা। কেননা যারা কাজ দিচ্ছে তাদের উদ্দেশ্য ফ্রীল্যান্সারদের মাধ্যমে মানসম্মতভাবে কাজ করিয়ে নেয়া। তাই আপানার কাজে আপনি যত দক্ষ্য হবেন আপনার মার্কেট ভ্যালু তত বাড়বে।
৮। ক্লায়েন্টের কাছ থেকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পাবার চেষ্টা করুন। সেক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই আপনার নতুন এবং পুরাতন ক্লায়েন্টের সাথে ভালো সুসম্পর্ক রক্ষা করতে হবে। ক্লায়েন্টের সাথে বিনয়ী থাকুন, নিয়মিত কাজের আপডেট দিন, তাঁদের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করুন। ইতিবাচক সাড়া পেতে সঠিক সময়ে কাজের মান ভালো রেখে ক্লায়েন্টকে হস্তান্তর করুন। এতে ক্লায়েন্টের আপনার প্রতি বিশ্বাস যোগ্যতা তৈরি হবে।
৯। সময়ের সঠিক ব্যবস্থাপনা আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ারে সফল হওয়ার একটি মূলমন্ত্র। আপনি প্রতিদিন কত ঘণ্টা কাজ চান, দিনে কতটি কাজ সম্পন্ন করতে চান তা শুরুতেই নির্ধারণ করে রাখুন।।যদি সময়ের সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা যায় তাহলে ক্লায়েন্ট আপনার দ্বারা কখনো হতাশ হবে না।
আমেরিকান উদ্যোক্তা জিম রনের একটি বিখ্যাত উক্তি “If you are not willing to risk the unusual, you will have to settle for the ordinary.” অর্থাৎ, আপনি যদি ঝুঁকি নিতে ইচ্ছুক না হন তবে আপনাকে সাধারণের জন্য স্থির হতে হবে। মনে রাখা জরুরী, সাফল্য কখনো একদিনে আসবে না।তাই মাঝপথে হার মানলে চলবে না।আপনার ধৈর্য্য, ইচ্ছাশক্তি এবং আপনার লক্ষ্য আপনাকে একটি সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
- ডিজিটাল মার্কেটিং কি? বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং এর চাহিদা
- কিভাবে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের জন্য একটি প্রফেশনাল ব্লগ লিখবেন?